বিডিনিউজ ১০, আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: পারস্য উপসাগরে ইরানি জলসীমা থেকে একটি মার্কিন সামরিক ড্রোন গুলি করে ভূপাতিতের দাবি করেছে দেশটির মেরিন সেনাদের। যদিও এর প্রায় ঘণ্টা খানেকের মাথায় ইরানের তেল ট্যাংকার ও জাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত আধাসামরিক বাহিনীর তথ্য ভাণ্ডারে সাইবার হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত এতেই তেহরানের নিয়ন্ত্রণাধীন তথ্য ভাণ্ডারটি পুরোপুরি অচল হয়ে গেছে বলে দাবি মার্কিন সামরিক সাইবার বাহিনীর।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) তথ্য ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাটি একটি প্রতিশোধ মূলক কর্মকাণ্ড। যা চালাতে সর্বপ্রথম সম্মতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’।
যদিও বিশ্লেষকদের মতে, একই দিনে ইরানের তথ্য ভাণ্ডারে সাইবার হামলা চালাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশ এবং ইরানি সেনাদের হাতে মানববিহীন মার্কিন ড্রোন ভূপাতিতের বিষয়টি এক রকম সাংঘর্ষিক। যা এক বড় ধরনের সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে।
এ দিকে সদ্য পরিচালিত এই গোপন অভিযানটি নিয়ে এখনো মুখ খুলেনি যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন মুখপাত্র এলিসা স্মিথ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মার্কিন নীতি ও অভিযানের নিরাপত্তার স্বার্থ বিবেচনা করে আমরা সাইবার, গোয়েন্দা ও পরিকল্পিত অভিযান নিয়ে কখনো কথা বলি না।’
এবারের গোপন এই অভিযানটির বিষয়ে সর্ব প্রথম সংবাদ প্রকাশ করেছিল ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’। যদিও এর পরও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে স্বীকারোক্তি দেয়নি মার্কিন প্রশাসন।
গণমাধ্যমের দাবি, চলতি বছরের জুন মাসের শুরুতে ওমান উপসাগরে ইরান দুটি তেলবাহী ট্যাংকারে হামলা চালিয়েছিল। মূলত এর পরপরই এক বড় ধরনের সাইবার হামলা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল পেন্টাগন।
অপর দিকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ‘মানববিহীন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার প্রতিশোধ হিসেবে আমরা এই সাইবার হামলার মাধ্যমে জবাব দিয়েছি। যার মাধ্যমে তেহরানকে এটাই বোঝানো হয়েছে যে, সাইবারকে সামরিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করে পেন্টাগন তার বিকল্প আরও শক্তিশালী করেছে। যা আগামীতে আরও বৃহৎ আকারে প্রকাশ করা হবে।’
এর আগে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের বের করে নেন। একই সঙ্গে ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিকে ‘ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল’ আখ্যা দিয়ে তেহরানের তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এর পরপরই এই দুদেশ মধ্যকার সম্পর্কে এক বৈরিতা দেখা দেয়, যা এখনও অব্যাহত আছে।
সে বছরের জুনে ভিয়েনায় নিরাপত্তা পরিষদের ইরানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরকারী পাঁচ সদস্য দেশ হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন (পি-ফাইভ) ও জার্মানি (ওয়ান)।